আজ ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেলাবতে ঠিকাদারের ভুলে ৬ মাস ধরে বন্ধ স্কুলের নতুন ভবনের নির্মান কাজ

নরসিংদী পোস্ট–

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ভুলে ৬ মাস ধরে বন্ধ আছে এক কোটি বার লক্ষ বিরাশি হাজার চারশ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সররাবাদ ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মান কাজ।

ফলে শ্রেণীকক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ের পাঠদানে তীব্র সমস্যা হচ্ছে বলে জানান অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ।


এলাকাবাসি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুরুতেই ভবন নির্মান নকশা অনুযায়ী শুরু করলেও একপর্যায়ে কন্টাকটার ভবনের এক পাশের প্রস্তের চেয়ে অন্য পাশের প্রস্তের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন ফিট এদিক সেদিক করে ফাইলিং এর বেইচ ডালায় করে ফেলে। যা বিল্ডিং এর মূল ট্রাকসারের সাথে মিল নাই।

জানা গেছে,স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বরাদ্ধে ভবনটি নির্মানের প্রাক্কালিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি বার লক্ষ বিরাশি হাজার চারশ টাকা। গত ২২.৪.২০২০ সালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা চূড়ান্ত অনুমোদন করেন। ০৯.১২.২০২১ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নিধার্রিত সময়ের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও নির্মান কাজের কিছুই হয়নি।

সরেজমিনে সররাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়,প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য সম্বলিত সাইন বোর্ড টানানোর নিয়ম থাকলেও কোন সাইন বোর্ড নেই। উল্লেখ্য যে,বেলাব উপজেলার নির্মান এলাকায় কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানই নির্মান তথ্য সম্বলিত সাইনবোড টানাইনা।

খবর পেয়ে স্থানীয় প্রকৌশলী অফিস কাজ বন্ধ করার কথা বললে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের কথা না শুনে যেদিক দিয়ে বিল্ডিং এর মাপ বেশি হয়েছে সেদিকে গোপনে ভেকু মেশিন দিয়ে বেইচ টেনে সমান করে উভয় পাশের প্রস্তের সমান করে মাটি ভরাট করে ফেলে।

উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আজাদুর রহমান আজাদ মেম্বার বলেন,ভবন নির্মান না হওয়ায় বিদ্যালয়ে পাঠদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন ভবন দ্রুত নির্মানের দাবী জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম জানান,কন্ট্রাকটারের ভুলে নতুন ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ। ফলে আমরা শ্রেণীকক্ষের অভাবে আছি। দ্রুত যাতে নতুন ভবনটি নির্মান করে দেয়া হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সল্লাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন স্বপন বলেন,ভবনের মাপে ভুল থাকায় এলাকাবাসি নির্মানে বাঁধা দিয়েছিল। ব্যাপারটা উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করানো হয়েছে। উনারা বলছেন এখানে এসে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি সরিয়ে দেখবে বেইচের কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।

মেসার্স নিঠুল কনস্টাকশানের ঠিকাদার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বিপ্লবকে ফোন দিলে প্রথমে তিনি রাগাম্বিত হয়ে বলেন,তুমি ইঞ্জিনিয়ার অফিসে গেলা কেন? তুমি তো আমার সাথেই যোগাযোগ করতে পারতা। ভবনের কাজ বন্ধ কেন জিজ্ঞাস করলে উনি বলেন কেন বন্ধ সেটা ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে জিজ্ঞাস কর। আমি তোমার কাছে কিছু বলবনা।

উপজেলা প্রকৌশলী সামসুল হক ভূইয়াকে মোবাইল ফোনে ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,মোবাইলে সব বক্তব্য দেয়া সম্ভব নয়। আপনি অফিসে আসেন। কথামত অফিসের গেলে ভবনের যাবতীয় তথ্য চাইলে উনি বলেন তথ্য আইনে আবেদন করলেই তথ্য দেয়া হবে। নতুবা না। পরে তিনি ভবন নির্মানের ভুলের কারনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দোষারুপ করে বলেন,আমি আগেও একাধিকবার ভবনটি দেখতে গিয়েছি। আবার ইউএনও স্যারকে নিয়ে যাব। যদি টেকনিক্যাল কোন সমস্যা থাকে বা ঠিক করা যায় তাহলে ঠিক করবো। নতুবা ঠিকাদারকে অবশ্যই নতুন করে বিল্ডিংটি নির্মান করতে হবে।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...